অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত [নতুন তথ্য]

অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত: হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমরা এই সুন্দরতম বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো, যা আপনাদের সবার জানা দরকার। আপনি যদি এই

অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত: হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমরা এই সুন্দরতম বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো, যা আপনাদের সবার জানা দরকার। আপনি যদি এই বিষয়টি না জানেন তাহলে আপনার জীবন স্বার্থক হবে না। এই জন্য এই পোস্টটি সম্পর্ণ পড়ুন।

অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত

অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত

অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত – প্রিয় প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! বিগত পাতাগুলােতে কথাবার্তার সুন্নাতসমূহ ও নিয়মাবলী’র প্রসঙ্গে নিচুপ থাকার গুরুত্ব ও তার উপকারিতা সম্পর্কেও বর্ণনা করা হয়েছে। এখানে আরাে কিছু আলােকপাত করা হচ্ছে। আজকাল দুর্ভাগ্যবশতঃ নিশ্ৰুপ থাকে এমন ইসলামী ভাই খুব কমই পাওয়া যায়। গােটা দিনই তাদের রসনা চলতেই থাকে। শুধু ঘুমালেই জিহ্বা কিছুটা আরাম পায়; বরং কিছু লোেকতাে এমনই বাচাল হয়ে থাকে যে,তারা ঘুমেও কথা বকতে থাকে।

বস্তুতঃ এ বকাবকি অনেক ধরণের বিপদাপদের মূল। যে ব্যক্তি বেশী কথা বলে, বেশীর ভাগ সময় তার মুখ থেকে মিথ্যা কথাও বের হয়ে যায়, গীবতও সম্পন্ন হতে থাকে,চুগলখােরীও করে বসে, গােপন রহস্যও ফাশ করে দেয়, মনে কষ্টও দিতে থাকে, মানুষের প্রতিটি কথাকে কাঁচির মতাে কাটতে থাকার কারণে নিজের মান-সম্রমও খুইয়ে বসে, বারংবারই এমনি হয়ে থাকে যে, নিজে কথা বলে আবার অনুশােচনা করতে থাকে। তারপর বাচাল লােক বক বক করে অন্য লােকদেরকে বিরক্ত করতে থাকে, মানুষ বিরক্ত হয়ে তারনিকট থেকে নিজেকে দুরে রাখার চেষ্টা করে।

মােটকথা, বেশী কথা বলার মধ্যে অগণিত ক্ষতি রয়েছে। একারণেই তাে কেউ বলেছে, “না বলার মধ্যে নয় গুণ। কেননা, নিশূপ মানুষ বহু ধরণের বিপদাপদ থেকে নিরাপদ থাকে। আল্লাহ্ (আযযা ওয়া জাল্লা) আমাদের সবাইকে বিনা প্রয়ােজনে কথা বলা থেকে বিরত রাখুন। আর জিহ্বা জনিত আপদ থেকে রক্ষা করুন। আমীন!আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লার নিকট অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা একেবারেইঅপছন্দনীয়।

বিশেষ করে অনর্থক কথা বলার প্রসঙ্গে এরশাদ ফরমায়েছেন

قد افلح المؤمنون – الذين هم في صلاتهم خاشعون والذين هم
عن اللغو مغرضون. ( الجزء ۱۸ , الركوع :۱)
অর্থ ঃ নিশ্চয়, কৃতকার্য হয়েছে ঈমানদারগণ; যারা নিজেদের নামাযে বিনয়ী হয় ।
আর ওই সব লােক, যারা অনর্থক কথাবার্তার দিকে দৃকপাত করেনা। (পারা – ১৮ ঃ রুকূ’- ১) (কানযুল ঈমান)
জান্নাতের দরকার হলে ভাল কথা ছাড়া অন্য কিছু মুখ থেকে বের করােনা। জিহ্বা দিয়ে যখন শুধু ভাল কথাই বের হবে, যিকর ও দুরূদের ওযীফাই উচ্চারিত হবে এবং অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তার অভ্যাস থাকবেনা, তখন মিথ্যা, গীবত ওচুগলখােরী এবং পরের দোষ অন্বেষণ ইত্যাদি গুনাহ থেকে প্রাণ বেঁচে যাবে।

আর এভাবেই ইনশাআল্লাহ! আযযা ওয়া জাল্লা, জান্নাতে প্রবেশের উপায় হয়ে যাবে। সুতরাং সাইয়্যেদুনা ইমাম গাযালী (রাহমাতুল্লাহি তা’আলা আলাইহি) উল্লেখ করেন, “সাইয়্যেদুনা হযরত ঈসা রূহুল্লাহ্ (‘আলা নাবিয়্যিনা ওয়া আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম)-এর বরকতময় দরবারে লােকেরা আরয করলাে, “এমন কোন কর্ম বলে দিন, যা করলে জান্নাত পাওয়া যায়।”

তিনি বললেন,“ভাল কথা ছাড়া আপন মুখ থেকে অন্য কিছু বের করােনা।” (ইহইয়াউল উলুম) অনর্থক কথা কাকে বলে?। প্রিয় ইসলামী ভাইয়েরা! অনর্থক কথা হচ্ছে তা-ই, যাতে দুনিয়া ও আখিরাতের কোন উপকার হয়না। তাতে ওই সব কথাও অন্তর্ভূক্ত, যেগুলাে দুনিয়া ও আখিরাতে ক্ষতির কারণ হয়। আর ওই সব কথাও অন্তর্ভূক্ত, যেগুলাের মধ্যে না ক্ষতি আছে, না লাভ। যেসব ক্ষতি রয়েছে ও জবাবদিহিতা এবং শাস্তি রয়েছে, ওই গুলাে থেকে বেঁচে থাকাতে প্রতিটি মানুষের বিবেকেরও দাবী। কিন্তু যেসব কথা এমনই হয়, যেগুলাের মধ্যে না লাভ রয়েছে, না ক্ষতি, সেগুলােও প্রকৃত পক্ষে ক্ষতিকর কথাবার্তাই।

মানুষের বিরুদ্ধে গীবতের পালায় পৌঁছে যায়


কেননা, যতক্ষণ পর্যন্ত এতােসব কথা বলেছে,ততক্ষণ সময়ে যিকর ও দরূদ পাঠ হতে পারতাে এবং তিলাওয়াত করতে পারতাে। এসব লাভময় জিনিষ বিনষ্ট হওয়া ক্ষতি নয় তাে আর কি? তদুপরি, যখন অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা শুরু হয়ে যায়, তখন তা বাড়তে বাড়তে মানুষের বিরুদ্ধে গীবতের পালায় পৌঁছে যায়। একারণে মঙ্গলতাে এতেই যে, নিশ্ৰুপ থাকবে কিংবা আল্লাহ তা’আলার যিককির করবে,প্রয়ােজনানুসারে, দুনিয়াবী অল্প-বিস্তর কথা বলবে, যতটুকু বৈধ বিষয়াদির সাথে সম্পৃক্ত হয় । দুনিয়ার বৈধ কথা বেশী হলে তাও হৃদয়ে কাঠিন্য ও পাষণ্ডতা পয়দা হবার কারণ হয়ে যায়।

মদান জিহ্বা বিশুদ্ধভাবে চললে তা সম্মান দান করে। আর যদি উল্টোসিধে চলে তবে তা অপমানিত করে ছাড়ে। উদাহরণ স্বরূপ, কাউকে গালি দিলাে, তবে তাে এমনও হতে পারে যে, তাকে তজ্জন্য পিটুনি ইত্যাদিও দেয়া হবে ।
জিহ্বা সােজা থাকলে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গও নিরাপদে থাকে।

শয়তান সহজে গুনাহ করিয়ে

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) থেকে বর্ণিত,সরকারে দু’আলম, মাদানী আক্ (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ করেছেন, “মানুষ যখন সকালে জাগ্রত হয়,তখন সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জিহ্বার সামনে বিনয়ভাবে একথা বলে,“তুমি আল্লাহকে ভয় কর। আমরা সবাই তােমারই সাথে সম্পৃক্ত। যদি তুমি সােজা থাকো, তবে আমরাও সােজা থাকবে। আর যদি তুমি বক্র হয়ে যাও, তবে আমরাও বক্র হয়ে যাবাে। (তিরমিযী শরীফ) বেশী বকবককারীর উপর শয়তান বিজয়ী হয়ে যায়। কেননা, মানুষ যখন বেশী বাচাল হয়, তখন তার জিহ্বা অবশ্যই ফসকে যাবে। এভাবে,
শয়তান তার মাধ্যমে সহজে গুনাহ করিয়ে নেয়। অবশ্য, যে ব্যক্তি চুপ থাকতে অভ্যস্থ হয়, সে শয়তানের উপর বিজয়ী হয়ে যায়। সুতরাং যে ব্যক্তি জিহ্বাকে হিফাযত করেনা, তার উপর শয়তান বিজয়ী হয়ে যায়।

হযরত আবু সাঈদ খুদরী (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি মাদানী তাজদার (সাল্লাল্লাহু তা’আলানআলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) – এর মহান দরবারে হাযির আর আরয করলাে, “হে আল্লাহর রসূল! (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) আমাকে কোন নসীহত করুন!” সরকারে মদীনা (সাল্লাল্লাহু তা’আলা আলাইহি ওয়া আলিহী ওয়া সাল্লাম) এরশাদ ফরমালেন,“আল্লাহ তা’আলার ভয়কে আঁকড়ে ধরাে, কারণ, তাই হচ্ছে সমস্ত নেক কাজের মূল। জিহাদকে অনিবার্যভাবে অবলম্বণ করে নাও;এটা হচ্ছে ইসলামের বৈরাগ্য’ (নির্জনতা-অবলম্বণ)। আল্লাহর যিকর ও তেলাওয়াতে কোরআনে পাককে নিয়মিত কাজে পরিণত করে নাও; কারণ, এটা তােমাদের জন্য পৃথিবীতে নূর হবে আর আসমানে তােমাদের সম্পর্কে আলােচনার মাধ্যম হবে। ভালাে কথা ছাড়া অন্য কিছু থেকে তােমাদের জিহ্বাকে হিফাযত করাে; কারণ, এর মাধ্যমে তােমরা শয়তানের উপর বিজয়ী হতে পারবে।” (তাম্বীহুল গাফিলীন) হযরত আবু বকর সিদ্দীক (রাদ্বিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু) মহা মর্যাদাবান সাহাবী ও নিশ্চিত বেহেশতী হওয়া সত্বেও জিহ্বার আপদ থেকে খুবই ভয়
বকী’

আশা করি আপনাদের এই “অপ্রয়ােজনীয় কথাবার্তা বলা থেকে বিরত থাকার ফযীলত” বিষয়টি বুঝতে কোনো অসুবিধা হয়নি। যদি কোনো বিষয় না বোঝেন তাহলে আমাদের ফেসবুক পেইজ এ নক দিতে পারেন।

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.