মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ

মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ: হ্যালো বন্ধুরা আজকে আমরা এই সুন্দরতম বিষয়টি নিয়ে কথা বলবো, যা আপনাদের সবার জানা দরকার। আপনি যদি এই বিষয়টি না জানেন তাহলে আপনার জীবন স্বার্থক হবে না। এই জন্য এই পোস্টটি সম্পর্ণ পড়ুন।

মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ

মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ

মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ কাফেলার বিভিন্ন পেশাজীবি লােকজনের সহিত কিছুদূর গমন করার পর সকলে আপনাপন কাস্থলে চলিয়া যাওয়ায় বড় পীর সাহেব সম্পূর্ণ একাকী চলিতে লাগিলেন। একাকী কিছু দূরে গমন করার পর তিনি আর একটি পরীক্ষার সম্মুখীন হইলেন এবং এই পরীক্ষায়ও তিনি বিশেষ কৃতিত্বের সহিত উত্তীর্ণ হইলেন।

পথ চলিতে চলিতে তিনি দেখিতে পাইলেন—পথিপাশে একজন জরাজীর্ণ বৃদ্ধলােক বসিয়া রহিয়াছে। নানারূপ ব্যাধিতে আক্রান্ত হইয়া সে এতই দুর্বল হইয়া পড়িয়াছে যে, তাহার দাড়াইবার ক্ষমতা নাই। লােকটি হযরত বড় পীর সাহেবকে দেখিয়া অত্যন্ত কাতর স্বরে তাঁহাকে সম্বােধন করিয়া বলিল—হে মাহবুবে সুবহানী। আমি একেতাে বৃদ্ধ, তদুপরি নানা ব্যাধিতে আক্রান্ত হইয়া এতই দুর্বল হইয়া পড়িয়াছি যে, আমার আর উঠিয়া দাঁড়াইবার ক্ষমতা নাই। দয়া করিয়া আমার হাত ধরিয়া তুলিয়া আমাকে একটু সম্মুখের দিকে আগাইয়া দিন।

বড় পীর সাহেবের কোমল হৃদয়


বৃদ্ধের অবস্থা দর্শন করিয়া এবং তাহার কাতর প্রার্থনা শ্রবণ করিয়া হযরত বড় পীর সাহেবের কোমল হৃদয় একেবারে গলিয়া গেল। তিনি হাত বাড়াইয়া তাহাকে ধরিয়া টানিয়া উঠাইয়া দাড় করাইলেন। কিন্তু কি আশ্চর্য! তিনি সেই বৃদ্ধের হাত ধরিয়া টানিয়া উঠান মাত্র সেই জরাজীর্ণ অশিতিপর বৃদ্ধ পরম সুন্দর এক যুবকে পরিণত
হইল।

তাহার সর্বাঙ্গ হইতে তখন অপূর্ব জ্যোতি বিচ্ছুরিত হইতে লাগিল। হযরত বড় পীর সাহেব এই আশ্চর্য ব্যাপার দেখিয়া যারপরনাই বিস্মিত হইয়া চিন্তা করিতে লাগিলেন এই বৃদ্ধ লােকটি কে? তখন সেই পরম সুন্দর তরুণ যুবক বলিল—হে পবিত্র পুরুষ! আপনি কি আমকে চিনিতে পারেন নাই? আমি দ্বীন ইসলাম। আজ আপনি যেইরূপ আমার হাত ধরিয়া উঠাইয়া নব বলে বলীয়ান করিয়া দিলেন, সেইরূপ আপনি ইহার বদলে “মুহিউদ্দীন’ অর্থাৎ ধর্মের পুনর্জীবন দাতা এই সম্মানজনক উপাধিতে ভূষিত হইবেন। ইহা বলিয়াই সেই সুন্দর যুবক অদৃশ্য হইয়া গেল।

কথিত আছে যে, হযরত বড় পীর সাহেবকে মুহিউদ্দীন উপাধি প্রদান করার জন্যই আল্লাহ তাআলা ফেরেশতাকে ইসলামরূপে প্রেরণ করিয়াছিলেন এবং উক্ত ফেরেশতাটি আল্লাহর নির্দেশেই ঐরূপ বহুরােগে আক্রান্ত ও অশিতিপর বৃদ্ধরূপে রূপান্তরিত হইয়া হযরত বড় পীর সাহেবকে পরীক্ষা করার জন্য রাস্তার ধারে
পড়িয়াছিলেন।
হযরত বড় পীর সাহেব বাগদাদে অবস্থান কালে একদিন তিনি জুমআর নামায পড়িয়া মসজিদ হইতে বাহির হইতেছেন, এমন সময় একজন অপরিচিত লোেক তাঁহার সম্মুখে এক জোড়া জুতা স্থাপন করিয়া এবং সসম্মানে তাঁহার সহিত মােসাফাহা করিয়া বলিলেন-হে মুহিউদ্দীন। ইহা আপনার জন্য সামান্য উপহার স্বরূপ প্রদত্ত হইল।

তাহার দেখাদেখি মসজিদে উপস্থিত মুসল্লীগণ সকলেই তাঁহার সহিত মােসাফাহা করিলেন। ইতিমধ্যে সেই অপরিচিত লােক কোথায় যেন অদৃশ্য হইয়া গেলেন। সেই দিন হইতে সকলেই হযরত বড় পীর সাহেবকে মুহিউদ্দীন নামে ডাকিতে আরম্ভ করেন।
মুহিউদ্দীন শব্দের অর্থ ধর্মকে নবজীবন দানকারী। ফলতঃ হযরত বড় পীর সাহেব পরবর্তীকালে সত্যই ইসলামধর্মকে নবজীবন দান করিয়াছিলেন। সেইজন্য তাঁহার মুহিউদ্দীন নাম সার্থক হইয়াছিল।

মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ইনতিকালের পর হতে মুসলমানগণ ক্রমে ক্রমে দুই একটি করিয়া ইসলামের বিধান পরিত্যাগ করিতে করিতে হযরত বড় পীর সাহেবের আবির্ভাবের সময় পর্যন্ত চারিশত বৎসরে এমন এক পর্যায়ে উপনীত হইয়াছিলেন যে, তৎকালে শুধুমাত্র নামেই ইসলাম ছিল, শরীয়তের আদেশ ও নিষেধসমূহের প্রতি তকালীন মুসলমানদের কিছুমাত্র লক্ষ্য ছিল না। এই জন্যই জনৈক ফারসী কবি বড় দুঃখ করিয়া বলিয়াছিলেন—“ইসলামদার কিতাব ও মুসলমানদার গাের” অর্থাৎ, যাঁহারা মুসলমান ছিলেন তাঁহারা এখন গােরস্তানে আশ্রয় লইয়াছেন, আর ইসলাম শুধুমাত্র কিতাবেই লেখা আছে। বস্তুতঃ হযরত বড় পীর সাহেব যদি সেই সময় ইসলামকে পুনর্জীবিত না করিতেন, তবে বর্তমানে দুনিয়ায় ইসলামের অস্তিত্বও থাকিত কিনা সন্দেহ।

ধন্যবাদ

আশা করি আপনাদের এই “মুহিউদ্দীন উপাধি লাভ” বিষয়টি বুঝতে কোনো অসুবিধা হয়নি। যদি কোনো বিষয় না বোঝেন তাহলে আমাদের ফেসবুক পেইজ এ নক দিতে পারেন।

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.