বাজরিগার পাখির দাম কত? ২০২৪ | বাজরিগার পাখির খামার তৈরি, খাবার এবং পালন পদ্ধতি

বাজরিগার বাংলাদেশের মানুষ শখ করে লালন পালন করে থাকে। তাদের এই পাখিটির প্রতি প্রচুর আগ্রহ রয়েছে। আমিও কিছু দিন আগে বাজরিগার পাখি লালন পালন করে ছিলাম। আজকে আপনাদের সেই বিষয়ে এবং বাজরিগার পাখির দাম খামার তৈরি, খাবার এবং পালন পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করব। শুরুতেই বলে রাখি এই পাখির দাম ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। নিচে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।

বাজরিগার পাখির ব্যবসায় অনেকে সফলতা অর্জন করেছে। এই পাখির খাবার অনেক কম লাগে। এ পাখি কিনতেও অতটা খরচ করতে হয় না। মোটকথা এই পাখির ব্যবসা শুরু করতে ইনভেস্ট কম লাগে। কিন্তু লাভ অনেক। তো চলুন এই বিষয় নিয়ে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করে নেয়।

বাজরিগার পাখির আসল দাম কি জেনে নিন

এই পাখিগুলোর দাম সাধারণত ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত হতে পারে। ছোট সাইজের পাখিগুলো ২৫০ টাকা বা ৩০০ টাকা ও হতে পারে। মাঝারি সাইজের পাখিগুলো ৪৫০ টাকা থেকে শুরু করে ৫৫০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। বাজরিগার পাখির মধ্যে বড় সাইজের পাখিগুলো সবচেয়ে দামি এই পাখিগুলোর দাম ১৬০০ টাকা থেকে শুরু করে ১৮০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

আজকে পাখির দাম কত?

বাজরিগার পাখির দাম ৩০০ টাকা ৪০০ টাকা বা ৫০০ টাকা হতে পারে। বাজারের সাধারণত এই দামেই পাখিগুলো পাওয়া যায়। যদি কোন দোকানদার এর চেয়ে বেশি দাম চায় তাহলে বুঝতে হবে সে আপনার কাছ থেকে বেশি লাভ করতে চাচ্ছে। তাই আপনি ৪-৫টি দোকান ঘুরে এরপর পাখি কিনুন।

এক জোড়া বাজরিগার দাম কত?

বাজরিগার পাখির আকৃতি রং এবং জাতভেদের এর দাম কম বেশি হতে পারে। তবে একজোড়া ছোট বাজরিগার পাখির মূল্য ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা হতে পারে। আবার মাঝারি সাইজের পাখিগুলো ৯০০ থেকে ১১০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে আর বড় সাইজের পাখিগুলো ২০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।

  • Show Cross Budgies একজোড়া পাখির দাম ২২০০ হাজার টাকা থেকে ২৪০০ টাকা পর্যন্ত।
  • Exhibition Local Budgieএকজোড়া পাখির দাম ৭০০০ হাজার টাকা থেকে ৮৫০০ টাকা পর্যন্ত।
  • Common Budgies একজোড়া পাখির দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা পর্যন্ত।
  • Rainbow Budgies একজোড়া পাখির দাম ৫০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
  • Fallow Budgies একজোড়া পাখির দাম ৭০০ টাকা থেকে ১০০০ হাজার টাকা পর্যন্ত।

১ টি বাজরিগার পাখির আজকের দাম?

একটি বাজরিগার পাখির আজকের দাম ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা হতে পারে তবে মাঝেমধ্যে এই পাখির দাম অনেক কম বেশি হয়। তাই আপনি বাজারে গিয়ে সঠিক দামটি ভালোভাবে জেনে নিন।

বাজরিগার চেনার উপায় কি?

বাজরিগার পাখির পুরুষ এবং স্ত্রী চেনা খুবই কঠিন। তবে এর আকৃতিগত পার্থক্য দেখে চেনা যায়। কয়েক মাসের অভিজ্ঞতা থাকলে খুব সহজেই চেনা যায়। নিচে বাজরিগার পাখির চেনার কয়েকটি উপায় দেওয়া হলো:

  • অল্পবয়স্ক বাজরিগারের চোখ বেশ বড় হয় এবং  পূর্ণবয়স্ক বাজরিগারের চোখ বেশ ছোট।
  • পূর্ণবয়স্ক হলে পুরুষ বাজরিগারের হবে নীল রং। আর পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী বাজরিগারের ঝিল্লি রং হবে বাদামি।
  • পূর্ণবয়স্ক স্ত্রী বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে বাদামি রংয়ের ঝিল্লি দিয়ে ঘেরা থাকে।
  • অল্পবয়স্ক পুরুষ বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে গোলাপি বা বেগুনি  ঝিল্লি থাকে।
  • পূর্ণবয়স্ক পুরুষ বাজরিগারের নাকের ছিদ্রের চারপাশে নীল রংয়ের ঝিল্লি থাকে।
  •  স্ত্রী বাজরিগারের নাকের চারদিকের ঝিল্লি হালকা সাদা, গোলাপি বা নীল রংয়ের হয়।

বাজরিগার পাখির খামার করে আয় করার উপায় কি?

বাজরিগার পাখির খামার করে অনেকে লাভ করছে। তাদের বিভিন্ন রকম কৌশল রয়েছে যেগুলো তারা ভুল করে করে শিখে। প্রথম অবস্থায় সবারই একটু একটু ভুল হবে। এবং এতে হতাশ হওয়া যাবে না। প্রথম অবস্থায় লাভও কম হতে পারে। লাভের দিকে না তাকিয়ে যদি ভালোভাবে শিখে যদি এই পাখি লালন পালন করা হয় তাহলে ভালো পরিমান টাকা মাসিক ভাবে আয় করা যাবে। এবং সেটি প্রতি মাসে ১ থেকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এই পাখির বাচ্চা বাজারে অনেক মূল্য রয়েছে একটি ছোট বাচ্চা আপনি বাজারে গিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করতে পারবেন।

এই পাখির খামার করতে হলে আপনাকে ছোট্ট একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ জায়গা পছন্দ করতে হবে। এবং সেখানকার পরিবেশ পরিষ্কার রাখতে হবে । যাতে কোনরকম রোগ জীবাণু পাখিকে আক্রান্ত না করতে পারে। সেখানে কয়েকটি খাঁচায় স্থাপন করতে হবে। এবং বাজার থেকে মাঝারি সাইজের কয়েকটি পুরুষ এবং কয়েকটি স্ত্রী বাজরিগার পাখি ক্রয় করতে হবে। 

সেগুলো প্রতিদিন ভালোভাবে লালন পালন করতে হবে। তাদেরকে পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে যাতে করে তারা বাচ্চা উৎপাদন করে। খাঁচা প্রতিদিন পরিষ্কার রাখতে হবে কোনমতেই খাঁচার ভেতর ইঁদুর না প্রবেশ করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এরই সাথে সাথে এর আশেপাশে যেন কোন বিড়াল না আসতে পারে সেটিও খেয়াল রাখতে হবে। বিড়াল দেখলে তারা অনেক ভয় পায় এবং বিড়াল যদি কোন রকম আঘাত করে তাহলে ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা কম হয়ে যাবে। তাই সাবধানে রাখবেন।

বাজরিগার পাখির খাবার তালিকা কি?

বাজরিগার পাখির খাবার তালিকা অনেকটাই নির্দিষ্ট। এদেরকে ভালো খাবার এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। যাতে করে ওরা খুব তাড়াতাড়ি ডিম দেয়। নিচে এই পাখিটির খাবার তালিকা বর্ণনা করা হলো:

  1. দোকানে বাজরিগার মিক্সড খাবার পাওয়া যায় এগুলোও খাবার হিসেবে দিতে পারবেন।
  2. সমুদ্রের ফেনা, ডিমের খোসা, পোড়া মাটি বা ইটের ছোট গুড়া এগুলো খাবারের তালিকায় রাখতে পারেন।
  3. ডিম সেদ্ধ, আপেল, ছোলাবুট থেতলিয়ে দিতে পারেন ছোট বাচ্চাদের জন্য।
  4. চিনা, তিসি, গুজিটিল, সূর্যমূখির বীজ, ব্লাক মিলেট, হোয়াইট মিলেট, চিকন পোলাউয়ের ধান ইত্যাদি।
  5. কলমি শাগ, লাল শাগ, দূর্বাঘাসের গাছ, সজনা গাছের কচি পাতা প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ দিন।

শেষ কথা:

এই পোস্টে আমরা বাজরিগার পাখির খাদ্য তালিকা দাম খামার তৈরি করার পদ্ধতি ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেছি। যদি আপনাদের একান্তই কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আমাদের ফেসবুক পেইজে নক করতে পারেন । সেখানে আমাদের টিম আপনাদের যথেষ্ট পরিমাণ সাহায্য করবে। আশা করি আপনাদের পোস্টটি ভাল লেগেছে, যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে আমাদের পোস্টটি কে আপনাদের ফেসবুক প্রোফাইলে শেয়ার করতে ভুলবেন না। ধন্যবাদ:)

Getting Info...

إرسال تعليق

Oops!
It seems there is something wrong with your internet connection. Please connect to the internet and start browsing again.