সন্ধি হলো দুটি বর্ণ বা ধ্বনির মিলন, যা ভাষাকে আরও সুন্দর ও সহজ করে তোলে। দ্রুত উচ্চারণের সময় শব্দে যে পরিবর্তন ঘটে, সেটাই সন্ধি।
এই পোস্টে আমরা সন্ধি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো, যাতে সহজভাবে আপনি বুঝতে পারেন। সন্ধি বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়, যা চাকরির পরীক্ষায়ও প্রায়ই আসে। তাই চলুন, সহজভাবে সন্ধি সম্পর্কে জেনে নেই!
সন্ধি কাকে বলে?
দুটি বর্ণ বা ধ্বনির মিলনকে সন্ধি বলে। দ্রুত উচ্চারণের কারণে দুটি ধ্বনির মিলনে যে পরিবর্তন হয়, সেটাই সন্ধি। যেমনঃ
- হিম + আলয় = হিমালয়
- আশা + অতীত = আশাতীত
বাংলা ব্যাকরণের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় - সন্ধি
বাংলা ব্যাকরণের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে একটি হলো সন্ধি। বিসিএস এবং অন্যান্য চাকরির পরীক্ষায় সন্ধি থেকে অনেক প্রশ্ন আসে। আজকের লেখায় আমরা সন্ধি নিয়ে আলোচনা করবো, যা খুব সহজে বুঝতে পারবেন।
সন্ধির প্রয়োজনীয়তা
- নতুন শব্দ গঠনের জন্য সন্ধির প্রয়োজন হয়।
- ধ্বনির পরিবর্তন ঘটাতে সন্ধি সাহায্য করে।
- সন্ধি ভাষাকে সুন্দর ও শ্রুতিমধুর করে।
- শব্দের আকার ছোট করতেও সন্ধি ব্যবহৃত হয়।
- বাংলা অব্যয় পদের সাথে সন্ধি হয় না।
সন্ধি কত প্রকার?
সন্ধি দুই প্রকারের হয়। যথা:
- স্বরসন্ধি
- ব্যঞ্জনসন্ধি
স্বরসন্ধি কাকে বলে?
যখন স্বরধ্বনির সাথে স্বরধ্বনি মিলে সন্ধি হয়, তাকে স্বরসন্ধি বলে। যেমনঃ
- শত + এক = শতেক
- শাঁখা + আরি = শাঁখারি
ব্যঞ্জনসন্ধি কাকে বলে?
ব্যঞ্জনধ্বনির সাথে ব্যঞ্জন বা স্বরের মিলন হলে ব্যঞ্জনসন্ধি হয়। যেমনঃ
- চার + টি = চাট্টি
- নাত + জামাই = নাজ্জামাই
ব্যঞ্জনসন্ধির প্রকারভেদ
ব্যঞ্জনসন্ধি তিন প্রকারে ভাগ করা যায়ঃ
- ব্যঞ্জনে-স্বরে সন্ধি
- স্বরে-ব্যঞ্জনে সন্ধি
- ব্যঞ্জনে-ব্যঞ্জনে সন্ধি
ব্যঞ্জনে-স্বরে সন্ধি
- দিক্ + অন্ত = দিগন্ত
- বাক্ + আড়ম্বর = বাগাড়ম্বর
স্বরে-ব্যঞ্জনে সন্ধি
- প্র + ছদ = প্রচ্ছদ
- মুখ + ছবি = মুখচ্ছবি
নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি
যে সন্ধি প্রচলিত নিয়মে হয় না, তাকে নিপাতনে সিদ্ধ সন্ধি বলে। যেমনঃ
- গো + ইন্দ্র = গবেন্দ্র
- পর + পর = পরস্পর
বিশেষ নিয়মে সাধিত সন্ধি
কিছু সন্ধি বিশেষ নিয়মে হয়, যেমনঃ
- উৎ + স্থান = উত্থান
- সম্ + কার = সংস্কার
সংস্কৃত বিসর্গ সন্ধি
যে সন্ধিতে বিসর্গ (ঃ) যুক্ত থাকে, তাকে বিসর্গ সন্ধি বলে। উদাহরণঃ
- মনঃ + যোগ = মনোযোগ
- সরঃ + বর = সরোবর
বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা সন্ধি
স্বরসন্ধি
- অতি + অধিক = অত্যধিক
- দৃষ্টি + অন্ত = দৃষ্টান্ত
ব্যঞ্জনসন্ধি
- তৎ + অবধি = তদবধি
- উৎ + জ্বল = উজ্জ্বল